1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

বাড়ি ফেরায় ট্রাক-পিকআপ ভরসা নিম্ন আয়ের মানুষের

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১১ বার দেখা হয়েছে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : রজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই উৎসব উদযাপনে পরিবারের সঙ্গে যোগ দিতে গাজীপুর থেকে হাজারো গার্মেন্টস শ্রমিক বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন। গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে ট্রাক-পিকআপে অল্প ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করছেন স্বল্প ও নিম্নআয়ের মানুষরা। সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুর থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ, হাটিকুমরুল-বনপাড়া, বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দিনমুজর শরিফুর মিয়া বলেন, আশুলিয়ায় দিনমজুরের কাজ করি। ঈদে সিরাজগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি। মা, বাবা ও ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে ট্রাকে কড্ডায় আসলাম। একজনের ভাড়া ৪০০ টাকা। বাসে ৪০০ টাকার ভাড়া চেয়েছিল ১ হাজার টাকা। আমরা গরিব মানুষ, এতো টাকা দিয়ে বাসে আসা সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই স্ব-পরিবারে ট্রাকে গ্রামের বাড়িতে এসেছি।

অপর ট্রাকের যাত্রী সবুজ শেখ, জাকের আলী, মমিন হোসেন বলেন, আমরা ১০ জন আমিন বাজারে লেবারের কাজ করি। সবাই একত্র হয়ে নাটোরে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি ট্রাকে। ৫০০ টাকা করে ভাড়া। এই পথে বাসের ভাড়া ১৫০০ টাকা। এতো টাকা দিয়ে বাড়িতে আসতে পারবো না বলে আমাদের মতো কম আয়ের মানুষের ভরসা ট্রাক ও পিকআপ। ওই ট্রাকটিতে প্রায় ৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। সবাই দিনমজুর। গ্রামের বাড়িতে সবাই যাচ্ছিলেন ঈদ করতে।

ট্রাক চালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ট্রাকের যাত্রীরা সবাই দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। ঈদযাত্রায় কম ভাড়ায় গরিব মানুষরা এভাবেই যে যার মতো করে বাড়িতে যাচ্ছেন। ঝুঁকি থাকলেও কী করার, দেখেশুনে চালিয়ে নিয়ে যাইতে হবে। রাস্তায় যদি পুলিশ ধরে তাহলে হাতে-পায়ে ধরে মাফ চেয়ে নেব। এছাড়া, আর কী করব। এদেরও তো মা-বাবা, সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। তাদেরও ইচ্ছা হয় পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতে।

গাজীপুর থেকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আসা ট্রাকের যাত্রী আবির শেখ বলেন, ৫০০ টাকায় যাচ্ছি গ্রামে। যা বাস ভাড়া থেকে অনেক কম। বাসে অনেক গরম, ট্রাকে খোলামেলা পরিবেশে যাচ্ছি।

অপর যাত্রী সোহেল বলেন, বাসের চাইতে কম ভাড়ায় পিকআপে যাতায়াত করা যায়। বাস যেখানে জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা ভাড়া আদায় করছে সেখানে পিকআপে পুরো পরিবার নিয়ে ২ হাজার টাকায় পৌঁছাতে পারলাম। আমাদের মতো স্বপ্ল ও নিম্নআয়ের অসংখ্য মানুষ ট্রাকে চেপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়িতে আসছেন।

যাত্রী আলী হোসেন বলেন, সরকারের বেধে দেওয়া ভাড়া কেউ মানছে না। যার পক্ষে যেভাবে সম্ভব যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছেন। তাদের (পরিবহন) কাছে আমরা অসহায়। আমরা অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে ঝুঁকি নিয়ে খোলা ও মালবাহী ট্রাকে চড়ে বাড়িতে যাচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশের কর্মকর্তা বলেন, ঈদের আগে যানবাহনের ভিড় নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা সার্বক্ষণিক কাজ করছে। যানবাহনগুলো যেন নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রীদের বহন করে সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। বাস মালিকদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।। পাশাপাশি যানবাহনের ফিটনেস ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে অভিযান চলছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মহাসড়কে ট্রাক-পিকআপে যাত্রী পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমাদের নজরে আসা মাত্রই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম.এ ওয়াদুদ বলেন, শিল্প কারখানার শ্রমিকদের ছুটি ঘোষণা হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনে গাড়ির চাপ পড়েছে। কিন্তু মহাসড়কে যানজটের মতো কোনো অবস্থা এ বছরে সৃষ্টি হবে না।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক জাফর উল্লাহ বলেন, গাড়ির সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত কোনো যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। গাড়ির চাপ বেশি থাকলে ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে মহাসড়ক পর্যবেক্ষণ করা হবে। ড্রোন ক্যামেরার ভিডিও সরাসরি জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে লাইভ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে যাত্রা করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা যাত্রীদের বাসের টিকিট কেটে নিরাপদে বাড়িতে আসার জন্য অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সড়কগুলোর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কোথাও যানজটের সংবাদ পেলেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবে ভ্রাম্যমাণ টিম।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ