1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:২২ অপরাহ্ন

অবশেষে বিদ্বেষ ছড়ানো ম্যাচে জিতলো বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১২০ বার দেখা হয়েছে

ক্রিড়া প্রতিবেদক : কেবল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াইয়ের জন্যই বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নয়তো বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পরা দুই দলের ম্যাচকে ঘিরে তেমন আলোচনা, উত্তেজনা কিছুই ছিল না। কিন্তু দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দুই দলের ম্যাচ লিখা হয়ে থাকলো ইতিহাসের অক্ষয় কালিতে। মাঠের ইস্যুতে। মাঠের বাইরের ইস্যুতে। যে ঘটনার সমাপ্তি হয়েছে প্রচণ্ড বাজেভাবেই।

ইতিহাসের প্রথম টাইমড আউট আউটের সাক্ষী হলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ প্রথম বল খেলতে ২ মিনিটের বেশি সময় নেওয়ায় টাইমড আউট হন। সময়ক্ষেপণ করায় বাংলাদেশের আউটের আবেদনে সাড়া দিয়ে শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ককে আউট দেন। তাতেই সব লণ্ডভণ্ড। পুরো বিশ্ব ক্রিকেটের চোখ পড়ে যায় দিল্লিতে। কেউ বাংলাদেশের পক্ষে তো কেউ শ্রীলঙ্কার। কেউ বলছেন, ক্রিকেটের আইনে আউট থাকায় ম্যাথুজ আউট। কেউ বলছেন, সাকিবের স্পোর্টসম্যানশিপ দেখানোর প্রয়োজন ছিল।

টাইমড আউট নিয়ে সেখান থেকেই ছড়াতে থাকে বিদ্বেষ। দুই দলের একটু পরপরই কথা কাঁটাকাটি। শরীরি ভাষায় আক্রমণাত্মক। নিদাহাস ট্রফির পর থেকে এই দুই দল যতবারই মুখোমুখি হয়েছে ততবারই কোনো না কোনো ইস্যুতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এবার দিল্লিতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৭৯ রান তাড়া করে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতলো ৩ উইকেটে, ৫৩ বল আগে।

কিন্তু ম্যাচের শেষটা হলো দুই দলের বৈরিতা বাড়িয়ে। হ্যান্ডশেক না করেই মাঠ থেকে উঠে যান শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা এগিয়ে গেলেও লঙ্কানদের কোচিং স্টাফদেরই কেবল পাওয়া গেল। ছয় ম্যাচ পর জয়ের স্বাদ পাওয়া বাংলাদেশ মাঠেই অপেক্ষা করছিল। কিন্তু লঙ্কান দল থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

বিশ্বকাপে আসার আগে সাকিব আল হাসান বলে এসেছিলেন, বাংলাদেশ এবার এমন কিছু করবে, যা আগে কখনো করেনি। মাঠের ক্রিকেটে ব্যাট-বলে সাকিব সেটা করে দেখাতে পারেননি। কিন্তু টাইমড আউট করে নিশ্চিতভাবে সাকিব অ্যান্ড কোং ইতিহাসের পাতায় নিজেদের আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিলো।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার বিশ্বকাপে জয়ের স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। এর আগে তিনবার মুখোমুখি হলেও কোনোবার জিততে পারেনি। সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় পেলো। বল হাতে ৫৭ রানে ২ উইকেটের পর ব্যাট হাতে ৬৫ বলে ৮২ রান করে লক্ষ্য সহজ করে দেন।

আগের ম্যাচগুলোতে রান পাচ্ছিলেন না বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। জয় পাওয়া ম্যাচে জ্বলে উঠলেন শান্ত। চিরচেনা শান্ত বোলারদের কোনো সুযোগ না দিয়ে ১০১ বলে ৯০ রান করেন। যেখানে ছিল ১২ চারের মার। সাকিব ও শান্তর ১৬৯ রানের জুটি বাংলাদেশের জয়ের পথ সহজ করে দেয়। যা ছিল এবারের বিশ্বকাপে শতাধিক রানের একমাত্র জুটি। সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল দুজনেরই। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।

তাদের আউটের পর মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ২৬ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়ে দ্রুত বিদায় নিলেও পরের ব্যাটসম্যানরা জয় এনে দেন সহজে। তবে ওপেনিং জুটি নিয়ে দূর্ভাবনা এখনও কাটেনি। তানজিদ ৯ রানে আউট হয়েছেন। লিটন ২৩ রানে থমকে যান।

টস ভাগ্য বাংলাদেশের পক্ষে আসায় লড়াইয়ের শুরুতে এগিয়ে যায়। সাকিব শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে রাতে ফিল্ডিং করা থেকে বিরত থাকেন। শিশিরে বল গ্রিপ করতে সমস্যা হবে জেনেই আগে বোলিংয়ে বাংলাদেশ। শুরুতে দলকে এগিয়ে নেন শরিফুল ও মুশফিক জুটি। কুশল পেরেরা পেসারের বল ড্রাইভ করলে বল যায় উইকেটের পেছনে। সেখানে বাজপাখি মুশফিক অসাধারণ দক্ষতায় বল জমিয়ে নেন গ্লাভসে।

এরপর ধারাবাহিক আক্রমণে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখে বাংলাদেশ। প্রতি আক্রমণে গিয়েছেন তারাও। এর মধ্যে আসালঙ্কাই কেবল ইনিংস বড় করতে পেরেছেন। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে তুলেছেন সেঞ্চুরি। ১০৫ বলে ১০৮ রানের ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ৫ ছক্কা। কিন্তু দলের হারে বিফলে যায় তার এই অনবদ্য ইনিংস।

বল হাতে বিশ্বকাপে নিজের অভিষেক ম্যাচ পেসার তানজিম রাঙিছেন ৩ উইকেটে। এছাড়া সাকিব ও শরিফুলের পকেটে গেছে ২টি করে উইকেট।

৫৩ বল হাতে রেখে জয় পাওয়ায় রান রেটে শ্রীলঙ্কাকে টপকে সাতে উঠেছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যেতে হলে বাংলাদেশকে শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকেও হারাতে হবে। কাজটা কঠিন। তবে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর ছন্দ যদি পরের ম্যাচে পুনেতেও থাকে অসম্ভব বলতে কিছুই তো নেই।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ